গর্দভের অহংকার - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ০৮৮

                                                                           

কবিতা-০৮৮ : গর্দভের অহংকার

হে মান্যবর মন্ত্রীবর্গ

আপনারা কি বুঝতে পারছেন, আপনারা কি বলছেন?

আপনারা কি জানেন, করোনা কি?

জানেন, কেন এসেছে, এর জন্য দায়ী কে বা কারা?

কী জানেন আপনারা?

 

বিশ্বের তাবৎ বৈজ্ঞানিকরা বলছে,

এটা মানবসৃষ্ট মহামারী নয়?

বড় বড় রাষ্ট্রপ্রধানরা, যারা পারমানবিক অস্ত্রের অধিকারী, আমেরিকা, রাশিয়া, বৃটেন, জাপান, ফ্রান্স, চীন, ইটালী তারা কাঁদছে আর বলছে, আকাশের প্রভু ছাড়া এ মহামারী আর কেউ থামাতে পারবে না।

তারা বুঝে গেছে, করোনা কেউ না, এ তাদের অর্জিত পাপ। তারা আজ অনুতপ্ত।

পাপের পথ ছেড়ে তাঁরা ভালোর পথে চলার সংকল্প ব্যক্ত করেছে। এতোদিন মুসলিমদের ওপর যে অত্যাচার, নির্যাতন ও বর্বরতা চালিয়েছিল সে জন্য তারা তওবা করছে।

যুগ যুগ ধরে তালামারা মসজিদের কপাট খুলে দিচ্ছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী যে সব জনপদে আযান নিষিদ্ধ ছিল সেখানে আযান দেয়ার শুধু অনুমতিই দেয়া হয়নি, মসজিদে জায়গা না পেয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মুসলমানের প্রভুর কাছে প্রার্থনা করছে।

মসজিদগুলোতে চব্বিশঘন্টা কোরান তেলাওয়াত চলছে। আর আঠারো কোটি জনতার সাথে তোমরা তামাশা করছো? মশকরা করছো? তাদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছো?

 

তোমরা কি জানো দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার, মানুষ মারার অস্ত্রে গুদাম ভরে তোলা, সীমাহীন পাপাচার রোধ করতেই আল্লাহর পক্ষ থেকে গযব হিসাবে এ করোনা।

 

তাকাও ইতালীর দিকে, তাকাও ফ্রান্সের দিকে

তাকাও চীন, রাশিয়া, আমেরিকার দিকে।

সারা পৃথিবী যখন আল্লাহর কাছে মাথা অবনত করে দিয়েছে তখন কোন সাহসে তোমরা করোনার মোকাবেলা করতে যাও?

পৃথিবীর সব মারনাস্ত্র আজ ব্যর্থ। ভেকসিন এখনো আবিস্কারই হয়নি। আর তোমরা বালির ভেতর মুখ লুকিয়ে বলছো, কোথায় আলো? আমরা তো কোন আলো দেখতে পাচ্ছি না।

হায় আল্লাহ! পৃথিবীকে দেখেও কিছুই শিখবে না তোমরা?

 

তোমরা কি জানো, এদেশে করোনা আসার কারণই তোমরা?

তোমাদের ঔদ্ধত্ব, অপরিনামদর্শিতার জন্যই এদেশে করোনা এসেছে।

তোমরা দেশটাকে বানিয়ে ফেলেছো বেশ্যালয়।

লুট করছো রাষ্ট্রীয় কোষাগার। আলেমদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছো।

বন্দী করে জেলে নিয়েছো, ফাঁসি দিয়েছো। কী করো নাই তোমরা?

নৌকা যখন ডুবছে তখন তোমরা চাল চুরিতে ব্যস্ত। তোমরা শপিংমল খুলে দিয়ে নিষিদ্ধ করছো মসজিদে জামাত।

গার্মেন্টস খুলে দিয়ে আইন ফলাচ্ছো তারাবির নামাজে।

যে রমজানে আল্লাহ রহমতের দুয়ার খুলে দেন, সে রমজানে রুদ্ধ করে দিচ্ছো সম্মিলিত দোয়ার সুযোগ।

এখনো শত শত আলেম তোমাদের জেলখানায়।

এখনো গুম হওয়া পুত্রের জন্য কাঁদছে তার মা।

কাঁদছে তার নাবালগ সন্তানরা।

সে কান্নায় কেঁপে উঠছে আল্লাহর আরশ, তোমরা নির্বিকার।

 

বলতো, মানুষের দুর্গতি দূর করার মালিক কে?

জন্ম মৃত্যুর মালিক কে?

কই, তোমাদের পিতা মাতা পূর্বপুরুষরা যখন মারা গেল, কেউ ঠেকাল না তাদের?

তোমরা না মুসলমান?

এই তোমাদের ঈমান?

আল্লাহ কি ব্যর্থ?

তোমরা কবে থেকে আল্লাহর দায়িত্ব নিলে?

 

ওরে মূঢ়। জানাযায় লক্ষ্য লোকের সমাবেশ দেখে তোদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছিল।

কই, তাদের কেউ তো এখনো মারা যায়নি?

বরং যারা তাদের তাচ্ছিল্য করেছিল, সেই সব পন্ডিতরাই এখন করোনায় কাতরাচ্ছে।

রহম করার মালিক কি তোরা, না তোদের প্রভু?

 

বাঁচতে চাইলে অনতিবিলম্বে সমগ্র জাতিকে নিয়ে তওবা কর।

হোটেল খোলার আগে খুলে দে আল্লাহর ঘর মসজিদ। বন্ধ কর নারী পুরুষের অবৈধ মেলামেশা।

দুর্নীতির লাগাম টেনে ধর। পাপাচারের পথ বন্ধ কর।

তারপর দেশের আলেম ওলামা ও ঈমানদারদের নিয়ে লুটিয়ে পড় আল্লাহর দরবারে।

বল, ক্ষমা করো মাবুদ, ক্ষমা করো মাবুদ, ক্ষমা করো মাবুদ।

০৫/০৫/২০২০ ৬টা

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.