কী বিচিত্র এই দেশ! - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ৩৮৮
কবিতা-৩৮৮ : কী
বিচিত্র এই দেশ!
জানিনা
তোমার মৃত্যু হয়েছে নাকি
গোপনে
খুন করা হয়েছে।
বাতাসে কেন
যেন প্রতিহিংসার গন্ধ পাচ্ছি।
নইলে সে
রাতেই তোমাকে মরতে হবে কেন,
যে রাতে মুক্তিযোদ্ধার গুলিতে সিঁড়ি গোড়ায় পড়েছিল বিষাক্ত
মৌমাছি।
এ কেমন
প্রতিহিংসা? আদালত কর্তৃক নির্দোষ ঘোষিত মানুষকে হত্যার জন্য যারা আইন বানাতে পারে
তারা
হার্ট এ্যাটাকের নাটক করে কোরানের পাখিকে হত্যা করলে অবিশ্বাস করার কী আছে!
তিনি
কখন মারা গেলেন,
কিভাবে মারা গেলেন কিছুই জানলো না স্বজনরা, শুধু
পুলিশী ভাষ্যে জানলো তিনি আর নেই। সত্যি কি তিনি নেই, নাকি
তাঁকে নেই করে দেয়া হয়েছে উত্তরের নির্দেশে।
এ দেশে
কতকিছুই ঘটা সম্ভব।
যাদের
এক টাকার দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারেনি আদালতে তাদের ফাঁসি হয়ে যায়, আর
হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে যারা তারা পায় সুরক্ষা প্রোটোকল।
চৌদ্দ
আগস্ট রাতে কি ঘটেছিল পিজিতে সেটা জানার জন্য আমরা নাহয় আরো কিছুদিন অপেক্ষা করবো।
কোরানের পাখি মারা গেছে কিন্তু তাঁর আমলনামা লেখক কেরামান ও কাতিবিন তো মারা
যায়নি।
একদিন
সঠিক খবর তাদের কাছেই পাওয়া যাবে।
জানিনা
তোমার মৃত্যু হয়েছে নাকি
গোপনে
খুন করা হয়েছে।
বাতাসে
কেন যেন প্রতিহিংসার গন্ধ পাচ্ছি।
বারই
আগস্ট বৈঠক, তেরই আগস্ট অসুস্থ, আর যে
রাতে স্বৈরাচার পড়ে ছিল সিঁড়ি গোড়ায় সে রাতেই মারা যায় কোরানের পাখি।
এভাবে
খাঁচায় আবদ্ধ করে কতজনকে হত্যা করা হয়েছে সে খবর জানে না মানুষ, কিন্তু
যিনি জানার তিনি ঠিকই জানেন।
হাসতে
হাসতে যারা ফাঁসির মঞ্চে যায় তারা মরে না। যারা খাঁচায় বন্দী হয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন
করে তারা মরে না।
তাঁদের
দুঃসহ মরণে কাঁদে রাতের আকাশ, কাঁদে বনভূমি। ভূমিকম্পে নড়ে ওঠে পৃথিবীর হৃদয় ভূভাগ। শোকের
বন্যায় ভাসে মানুষের অন্তর মহল।
আর
ঘৃণার বন্যায় ডুবে যায় সেইসব পাপিষ্ঠা, যারা সাঈদীর লাশকেও ভয় পায় বলে
নগর ঢাকায় আটকে দেয় জানাযার নামাজ।
জানাযা
আটকে দেয়া যায়, কিন্তু উপচানো ভালবাসা আটকানো যায় না। কেউ জানাযায় সতেরজন প্রতিবেশীও পায় না, আবার
কেউ জনসমাগমের ভয়ে জানাযার নামাজের অনুমতিও পায় না।
কেউ
নামায পড়তে এসে গুলি খেয়ে মরে যায়।
কী
বিচিত্র এই দেশ!
১৫/০৮/২০২৩ বাদ আছর
অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
No comments