অনন্ত সফর - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ১৬৭

                                                                                              

কবিতা-১৬৭ : অনন্ত সফর

কে জানে কোন অনন্তলোকে জন্ম হয়েছিল আমার। সেই সুখ, সেই স্বপ্ন,

সেই অভিসার সব ভুলে গেছি।

 

তারপর? তারপর পার হয়ে গেছে বহুদিন। জানি না কখন এসেছিলাম বাপের পাঁজরে, মায়ের উদরে।

কতদিন কতরাত কেটে গেছে সেই গুহাঘরে। কতদিন মায়ের কেটেছে নির্ঘুম রাত।

 

ছোটবেলা খুব দুষ্ট ছিলাম।

মনে হয় মাকেও জ্বালিয়েছি খুব।

তারপর? তারপর কতদিন ঘুমিয়ে  ছিলাম মায়ের পদ্মদীঘিতে, কোমল ফাইবারে, নিরাপদ সে কোন আনন্দালোকে।

 

একদিন। একদিন সে সফর শেষ হলো। এক গোলক থেকে নেমে চলে এলাম আরেক গোলকে।

এ গোলক এক বেদনাবেলুন।

দেখেই চিৎকার করে কেঁদেছিলাম।

বেদনার্ত পৃথিবীতেও কেটে গেল বহু দিন, বহু রাত।

 

সবার মত আমিও বাড়ি করলাম। হাসি কান্নায় সময় গড়িয়ে গেল। মনে হলো, আহা, কত সুখ।

কত প্রেম, প্রীতি, প্রণয়।

কত জয়, পরাজয়।

দুঃখেও হাসি, খুশীতেও কাঁদি।

আজব এক কারখানা।

ভেবেছিলাম, এখানেই সফরের শেষ।

 

না। সব ভাবনাই সত্য হয় না।

আরো এক সত্য এসে সহসা সামনে দাঁড়ালো। কোথায় গেল বাড়িঘর, কই ধুলোবালির রাজপ্রাসাদ।

 

না, কেউ এখানে থাকে না। কেউ না, কেউ না। সবাই সবকিছু ছেড়েছুঁড়ে চলে যায় রহস্যাবৃত পরপারে।

সেখানেও আছে একজন।

মানুষের পরম প্রিয়জন।

ভাইয়ের চেয়ে প্রিয়, বাপের চেয়ে প্রিয়। এমনকি মায়ের চেয়েও প্রিয়।

 

তিনি মানুষের জন্য দুটো পুরষ্কার রেখেছেনজান্নাত ও জাহান্নাম।

মুকুল আপার মতো স্রষ্টা ও সৃষ্টিকে যারা ভালবাসতে পারে তারা হাসতে হাসতে জান্নাতে চলে যায়।

 

আর হিংসুক ও বর্বররা অবাধ্যতার লকেট পরে মিছিল করতে করতে জাহান্নামে ঢুকে পড়ে।

 

হে মানুষ, তুমি তোমার সফর

কোথায় গিয়ে শেষ করতে চাও?

০২/১২/২০২১   বাদ মাগরিব

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.