ক্ষমতার দাপট - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ৩৮৩

           

কবিতা-৩৮৩ : ক্ষমতার দাপট

খান সাহেব এলেন ইফতারীর দাওয়াত নিয়ে। বললেন, হুজুর,

শুক্রবার আমার বাসায় আপনার ইফতারীর দাওয়াত।

আমি চেয়ারটা এগিয়ে দিয়ে বললাম, বসেন। দাওয়াত পেয়ে খুশী হলাম। কিন্তু আমার যে একটু অসুবিধা আছে। শুক্রবার যে আমি যেতে পারবো না।

কেন, কি অসুবিধা হুজুর?

আমি মাথা নিচু করে কি জবাব দিব ভাবতে লাগলাম।

 

সত্যটা বললে আমার চাকরী থাকবে না। বললাম, ব্যক্তিগত সমস্যা। বলা যাবে না।

জ্বি না হুজুর বলতেই হবে। মসজিদের সাবেক সভাপতি এবার বললেন, দরকার হলে ডেট পাল্টে দেবো।

এবার আমি মাথা তোললাম। হঠাৎ কোত্থেকে যে একগাদা সাহস এসে বলল, আপনি না খুতবা দেন, রিজিকের মালিক আল্লাহ, তাহলে সত্য বলতে ভয় পাচ্ছেন কেন?

আমি বললাম, আপনার সুদের ব্যবসা  কেমন চলছে?

আলহামদুলিল্লাহ। আপনাদের দোয়ায় ভালই।

হোটেলে কি এখনো মদ চলে? সুন্দরী বালারা আসে?

তিনি বুঝে গেছেন আমি কি বলবো। জবাব না দিয়ে তিনি মাথা নিচু করলেন।

 

দেখুন খান সাহেব, এ কারণেই আপনাকে সভাপতি পদ থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। লোকে বলে আপনার সব কামাই নাকি হারাম পথে হয়। হারাম উপার্জনকারীর কোন এবাদত কবুল হয় না।

 

রোজা হচ্ছে তাকওয়া অর্জনের জন্য। তাকওয়া হচ্ছে আল্লাহভীতি।

আল্লাহর ভয় থাকলে কেউ মন্দ কাজ করতে পারে না।

আপনি জেনেশুনেও সব হারাম কাজ করছেন। একদিকে সুদ খাচ্ছেন, অন্যদিকে তারাবি পড়ছেন।

এ নফলের কোন দাম নেই। আপনি কর্মচারীর বেতন না দিয়ে এতকাফে বসেন।

খান সাহেব, নফল এবাদত না করলে কেউ দোজখে যাবে না। কিন্তু হারাম কামাই না ছাড়লে, অন্যের হক মারলে  দোজখ আপনার জন্য অবধারিত। আপনার হারাম কামাই দিয়ে ইফতার করতে আমার ঘেন্না লাগে।

 

আমাকে মাফ করবেন। সবকিছু জেনেশুনে আপনার ইফতারের দাওয়াত আমি কবুল করতে পারি না।

আপনার এসব লোক দেখানো এবাদত আপনার পাপই আরো বাড়াবে। কি দরকার টাকা খরচ করে পাপ বাড়ানোর?

তিনি কি বুঝলেন, চেয়ার ছেড়ে উঠতে উঠতে বললেন, আপনাকে আমি দেখে নেবো।

২০/০৪/২০২২  বাদ জোহর

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.