পুঁজিবাদের কসাইখানা - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ০১২

      

কবিতা-০১২ : পুঁজিবাদের কসাইখানা

পুঁজিবাদের প্রেম অনেকটা আমেরিকার বন্ধুত্বের মত।

সে কারো বন্ধু হলে তার ধ্বংসের জন্য আর কোন শত্রু লাগে না।

সারাদিন পিরিতের গান শোনায় আর বসে বসে বৃক্ষের শিকড় কাটে।

তারাই আমাদের চোখে লোভের তৃষ্ণা জাগায়।

ভোগের পেয়ালা তুলে ধরে ঠোঁটের আগায়।

 

পুঁজিবাদীরা আমাদের জন্য আমদানী করে ফরমালিন দেয়া আঙুর, আপেল ও নানা ফলমূল। টিনজাত দুষিত খাবার। আমদানী করে নিরব ঘাতক।

তারাই আমাদের জন্য আমদানী করে বাসী খাবারের চেইনশপ।

 

পাড়ার মোড়ে মোড়ে গজিয়ে উঠা ফাস্টফুডের যে দোকানগুলো আমাদের সন্তানদের জিহ্বায় অনবরত রোগের স্বাদ ও বদহজম ঢালতে থাকে তা পুঁজিবাদেরই নিকৃষ্ট উপহার।

 

তারা আমাদের খাদ্যে ফরমালিন দেয়।

চিন্তা ও মননে ফরমালিন দেয়।

আমাদের রক্তে ফরমালিন দেয়।

আর এভাবেই আমাদের রক্ত ও ঘামের বদলে সংগৃহীত পুঁজিটুকু হাতিয়ে নেয়।

 

তারপর যদি নিঙড়ে নেয়া পুঁজির পরও আমাদের শরীরে কোন পুঁজি অবশিষ্ট থাকে সেটুকুর জন্য লোভের আলজিভ বের করে ছিলা আমের ছালের মত চাটতে থাকে আমাদের শরীর। হায়রে লোভ!

 

যে অসুখ তারা পাঠিয়েছিল বিমানে ও নেটে সেই অসুখ সারানোর জন্য তারাই গড়ে তোলে আধুনিক হাসপাতাল।

পাঠায় চিকিৎসার জন্য যন্ত্র, অসুধ ও ফর্মূলা।

এ দেশের কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি জনতা মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচার জন্য ভিটেমাটিটুকু বিক্রি করে পুঁজিপতিদের তৃষ্ণা মিটায়।

আর নিজে ফতুর হয়, পরিবারকে বানায় পথের ফকির।

 

আধুনিক হাসপাতালগুলো তাই এক ধরনের কসাইখানা। পার্থক্য হচ্ছে, কসাইখানায় জবাই করা হয় জন্তু জানোয়ার, হাসপাতালে জীবন্ত মানুষ।

০৬/১০/২০১৭

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.