একটি অমর কবিতার নাম শিবির - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ২৫৭

                                                                                                                

কবিতা-২৫৭ : একটি অমর কবিতার নাম শিবির

শিবির একটি অমর কবিতার নাম।

যে শিবিরে সমবেত হয় একদল সত্য সৈনিক।

যারা শপথ নেয় মজলুমের পক্ষে দাঁড়াবার।

যারা জালিমের আতঙ্ক হয়ে সাহস যোগায় নিপীড়িত জনতার।

যাদের দেখে ভূত দেখার মত চমকে ওঠে রাষ্ট্রীয় ডাকাত দল।

 

বাংলার পাকা ধানক্ষেতে যারা আগুন দেয়, সেই দস্যু তাড়ায় যে সাহসী যুবক তার নাম শিবির।

মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যে খুনী শিশু হত্যা করে, সেই মাকে যে শান্তনার বানী শোনায় তার নাম শিবির।

যতদিন আকাশে বাতাসে আর্তের চিৎকার ভাসবে, ততোদিন তারা হবে ব্যথিতের সহায়।

 

তারা জানতে চায়, কেন মানুষের পেটে খাবার থাকবে না? কেন বাস্তুহীন মানুষকে ফুটপাতে শুয়ে থাকতে হবে? কেন চিকিৎসার অভাবে মারা যাবে আল্লাহর প্রিয় বান্দা আশরাফুল মাখলুকাত?

কারা নিরন্ন মানুষের খাবার কেড়ে নিয়ে মানুষ হত্যার মারাত্মক মারণাস্ত্র বানায়?

 

মানবতাকে পদদলিত করে পাশবতার নিশান ওড়ায় যে দানবরা, তাদের বিরুদ্ধে যে রুখে দাঁড়ায়, সে শিবির।

 

শিবির ভোরের সূর্যোদয়।

জোস্নাভরা পূর্ণিমা চাঁদের নাম শিবির।

শিবির গ্রীষ্মের খরতাপে দখিনা হাওয়া।

শিবির হীম কুয়াশায় ওম ওম গরম চাদর।

শিবির আটষট্টি হাজার গ্রাম্য মসজিদে মক্তবের সোনামনিদের হাতে মিষ্টি বাতাসা।

 

ভায়েরা আমার, শিবির আমার মুক্তির ঠিকানা। শিবির নিশি রাতে কোকিলের ডাক। কবুতরের বাকুম বাকুম।

 

মানুষের রক্তখেকো ড্রাকুলার কবল থেকে মানবতা রক্ষা করতে তারা নেমে এসেছে আরশে আজীম থেকে

হেরার বিচ্ছুরিত আলো এখন তাদের হাতে। জমজমের আবেহায়াত নিয়ে তারা এসেছে আমাদের হৃদয়ের অন্ধকার ধুয়ে দিতে।

 

বুক খুলে দাও। ওদের হাতে দিয়ে দাও সব ঘৃণা। দিয়ে দাও মিথ্যা ও প্রতারণার পীতবর্ণ লোভ। ওরা সে পাপ পরিষ্কার করে দেবে।

 

ওদের হাতে আজাজিলকে বন্দী করার শিকল। আজাজিল কারারুদ্ধ হলে থেমে যাবে দুর্নীতির থকথকে অভিশাপ। ঘুষ দিতে ও নিতে মানুষের হাত নয় শুধু, হৃদয়ও কাঁপবে। সুদের মরা অক্টোপাস ভাসবে মৃত তিমির মত।

 

যে নরম মাংসপিন্ড মানুষকে শয়তান হতে হাতছানি দেয় সেখান থেকে ভেসে আসবে মেশক আম্বরের ঘ্রাণ।

 

মানুষের বুক থেকে বেরোবে পুষ্পসৌরভ। চোখের তারায় ভাসবে জাফরানী ফুল। বোনের হাতগুলো হবে ভাইদের জন্য সুখবটিকা।

 

মানুষ বলবে, হায়, এই দেশে একদিন দুঃশাসন ছিল। ফেরাউন ছিল। নমরুদ ছিল। নবী নূহের অবাধ্য সন্তান ছিল।

শিবির আমাদের এনে দিয়েছে

পদ্মার চরে সবুজের সমারোহ।

আর পাহাড়ের নীল চূড়ায় সম্পন্ন কুটির। বুকের জমিনে থোকা থোকা ফুল।

 

মানুষের মুক্তির জন্য যারা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে প্রমাণ করেছে সত্য ও সুন্দরের জন্য তারা পান করতে পারে শাহাদাতের অমিয় পেয়ালা। তারাই শিবির।

শিবির প্রতিভা খোঁজে না, বরং তারা প্রতিভা বানায়। তাই শিবিরকে বলা হয় মানুষ তৈরীর কারখানা।

 

সংগ্রাম ও আন্দোলনের এ অগ্রসৈনিকদের আসুন সকলে অভিভাদন জানাই।

শিবিরের হাত ধরে পৌঁছে যাই কাঙ্খিত মুক্তির ঠিকানায়।

সোনালী সূর্যোদয় আমাদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে।

০৭/০৩/২০২৩ বাদ মাগরিব

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.