এক থোকা আনন্দ - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ২১১

                                                                                                       

কবিতা-২১১ : এক থোকা আনন্দ

তুমি বলছো, ইদানিং আমি বেহুদা কাজে প্রচুুর সময় ব্যয় করি।

তুমি ঠিকই বলেছো। আমি ইদানিং বেহুদা কাজে প্রচুর সময় ব্যয় করি।আমি মনে করি, মানুষেরও উচিত কাজের ফাঁকে কিছুটা সময় বেহুদা ব্যয় করা।

 

তোমার মতে, কৃষক গায়ের ঘাম ফেলে যে শস্যদানা ফলায় তার দরকার আছে। কিন্তু আমি সারাদিন যে কবিতা নিয়ে পড়ে থাকি এটার কোন দরকার নেই।

এটাকেই তুমি বলছো বেহুদা কাজ।

 

আচ্ছা, ফুল কি কেউ খায়?

নাকি ফুল মাথার নিচে দিয়ে ঘুমায় কেউ?

তাহলে ফুলের কি দরকার?

 

রাত তো বানানো হয়েছে ঘুমের জন্য।তাহলে চাঁদের জোসনার কি দরকার?

আসমান ভরা তারকা দিয়ে কি করে মানুষ?

ঝর্ণার কলতান কি কাজে লাগে?

 

প্রভু তো কতকিছুই সৃষ্টি করেছেন।

তোমার কি মনে হয় এর অনেক কিছুই অনাহূত সৃষ্টি?

অথচ কোরান বলছে, কোনকিছুই আল্লাহ অনর্থক সৃষ্টি করেননি।

 

তোমার মনে হতেই পারে, জলে শুধু মাছ থাকলেই চলতো। কুমির বা শাপলার কি দরকার ছিল?

কেন প্রভু বেহুদা শাপলা সৃষ্টি করলেন?

কেনো জোসনা সৃষ্টি করলেন?

আচ্ছা, "ভুলো না আমায়" লিখে তুমি যে

রুমালটা দিলে, তা না দিলে আমাদের প্রণয় কি কম গাঢ় হতো?

তোমার মত অনুসারে, এটা কি একটা অহেতুক কাজ নয়?

 

কিন্তু আসলে কি তাই? তুমি কি জানো, তোমার যা মনে হয় বেহুদা

তা প্রয়োজনেরও অধিক?

 

সংসার চালানোর জন্য আমাকে চাকরী করতে হয়। তারপরও তোমার ভাষায়, কবিতা লেখার মত ফালতু কাজে আমি সময় ব্যয় করি।

হায়! যদি বুঝতে ফালতু কাজটাই আসল কাজ।

 

তোমার মতে, ইদানিং আমি বেহুদা কাজে বেশ সময় ব্যয় করি। মানুষেরও উচিত কাজের ফাঁকে কিছুটা সময় আনন্দের জন্য ব্যয় করা।

 

তুমিই বলো, মানুষ কি বেদনার বোঝা বয়ে বেড়ানোর জন্য বেঁচে থাকে?

না। তবু মানুষ বেদনায় নীল হয়।

দুঃখের ঘানি টানতে টানতে পার করে দেয় অমূল্য জীবন।

অথচ একটু আনন্দময় সময় কাটালে

পৃথিবী হতে পারতো অনিন্দ্য সুন্দর। জীবনকে অর্থবহ করার জন্য সবারই একটু আনন্দময় সময় ব্যয় করা উচিত।

 

জীবনতো এক থোকা আনন্দের নাম।

চলো, রূপালী ইলিশ আরো কিছু আনন্দ এইবেলা সঞ্চয় করি।

২৩/০৬/২০২২-বাদ ফজর

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.