যোগ্যতম উত্তরাধিকারী - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ১৩৬

                                                                                        

কবিতা-১৩৬ : যোগ্যতম উত্তরাধিকারী

ইদানিং আমি ঘুমাতে পারি না।

ঘুমাতে গেলেই আজেবাজে কীসব স্বপ্ন দেখি।

আসমান ঢেকে ফেলেছে আগ্রাসী যান্ত্রিক শকুন।

ঘন মেঘ যেন ঢেকে ফেলেছে দুনিয়া।

চারদিকে ভীতিকর আঁধারের প্রেতউৎসব।

যান্ত্রিক শকুন কখনো শব্দ করে আসে, কখনো নিঃশব্দে।

পেঁচার মত চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে শস্যদানা।

তারপর ভয়ের ধুয়া ছেড়ে পালিয়ে যায়।

আরো কি সব ভয়ংকর ঘটনা।

 

না, এর মধ্যে কেয়ামতের আলামত নেই।

কখনোই কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

গযবের ভয়ে জমিন যখন কাঁপতে থাকে মানুষ ওটাকে ভূমিকম্প বলে।

ওখানেও কেউ গযব দেখে না।

 

ভয়ে আমি ঘুমাতে পারি না।

আমার ভয়, এখনো নারীরা বেপর্দা চলে।

এখনো পুরুষ বহুগামী হয়। এখনো

কিশোর কিশোরী দরজা বন্ধ করে মোবাইল টেপে।

 

নমরুদকে ধ্বংস করার জন্য প্রভু মশা পাঠিয়েছিলেন।

ফেরাউন ডুবে মরেছে ভুলের জলে।

পৃথিবীর মানুষ এখন অনেক চতুর। তারা একটার পর একটা ফন্দি করে ভাবছে, পরম প্রভূর চোখে ধুলা দিয়ে বেঁচে যাবে তারা।

 

সুদখোরের টাকায় হচ্ছে সুরম্য মসজিদ।

ভিক্ষার টাকায় চলে এতীমখানা।

ঘুষ খেতে না পারলে তাকে নেতা বানানো হয় না।

রিলিফের মাল চুরি করতে পারা চেয়ারম্যানদের অপরিহার্য যোগ্যতা।

চালাক শয়তানরা পাগড়ি ও আলখেল্লায় মুখ ঢেকে 'হক মাওলা হক মাওলা' বলে জিকির করে

আর পিটপিট করে তাকিয়ে দেখে নোটের ওজন।

জিকিরের তালে তালে বিক্রি হয় বেহেশতের টিকেট।

 

ছোট ছোট সতর্কবার্তার দিন শেষ।

পাখি, পতঙ্গ ও  মশাদের তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে চালাক মানুষ।

এখন পৃথিবীর সাথে লড়তে এসেছে অনুজীব ভাইরাস। মশারও অধম। যাকে খালি চোখে দেখা যায় না।

এরই মধ্যে সে বিশ্বকে তছনছ করে দিয়েছে।

কেড়ে নিয়েছে অগণিত চৌকস নেতা, চতুর বুদ্ধিজীবি, শোবিজ মার্কেটের নামীদামী খেলোয়াড়।

 

আমি ঘুমাতে পারি না।

ঘুম আমার আসে না।

ভয় হয়, আমরাই কি তবে

আদ ও সামুদ জাতির যোগ্যতম উত্তরাধিকারী?

০১/০৫/২০২১   ৪টা

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.