দৃশ্যকাব্যঃ অভিজ্ঞতা - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ১৩৫
কবিতা-১৩৫ :
দৃশ্যকাব্যঃ অভিজ্ঞতা
আম খেয়েছিস?
ফজলি আম?
ল্যাংড়া?
মোহনভোগ?
আম্রপলি?
ছেলেটি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ে।
বাহ! গোপাল ভোগ?
এবারও ছেলেটি হ্যাঁ সূচক মাথা
নাড়ে।
সব খেয়েছিস? কেমন
লাগে রে?
ছেলেটি দাঁত বের করে বললো, মজা!
মিষ্টি।
বিদেশী লোকটি কিছুই বুঝলো না।
অবাক হয়ে তাকালো দোভাষীর দিকে।
বিকৃত উচ্চারণে বললো, মজা? মিষ্টি?
চোখে অন্তহীন জিজ্ঞাসা চিহ্ন।
দোভাষী হেসে দিয়ে বললো, বুঝলেন
না? মজা মানে, মজা মানে.... সুইট।
বিদেশী বললো, মিষ্টি?
দোভাষী এদিক ওদিক তাকিয়ে বিদেশীর
চোখে চোখ রেখে বললো,
মিষ্টি মানে, মিষ্টি মানে অলসো সুইট।
বিদেশী বললো, লাইক
সুগার?
ছেলেটি ইশারায় জানতে চাইল,
বিদেশী কি জানতে চাচ্ছে?
দোভাষী বললো, মিষ্টি
কেমন?
ছেলেটি বললো, ও, তাই!
সে ঘরের এক কোণায় রাখা
টেবিলের ওপর থেকে দৌড়ে গিয়ে কেটে রাখা লাল আমের হাফপ্লেটটা এনে বললো, খাও।
বিদেশী হাতে চামচ নিতে নিতে বললো, পাপাই?
ওহ, নো, দিস ইজ
ম্যাংগো।
বিদেশী চামচ দিয়ে একটা টুকরা
মুখে দিয়ে লাফিয়ে উঠলো,
ওয়াও, ওয়াও। হাউ সুইট।
ঘরের এক কোণে চেয়ারে বসেছিল
ঘোষক। সেদিকে তাকিয়ে দোভাষী ইশারা করলো তাকে।
সেও এগিয়ে এল। সবাই মিলে আম
খাচ্ছে।
হঠাৎ সে একটুকরো আম দর্শকদের
দিকে উচিঁয়ে ধরে বললো,
ভাইসব,
জিহ্বায় না লাগা পর্যন্ত একটুকরো
আমের স্বাদ যেমন কিছুতেই বুঝা যায় না তেমনি অভিজ্ঞতা ছাড়া মানুষ কিছুই বুঝে না।
মিষ্টি কুমড়া কখনো বাঙ্গি হয় না।
চালকুমড়া কাটলে তরমুজের মত লাল
দেখা যায় না।
পেপে ও আমের স্বাদ এক হয় না।
প্রতিটি বস্তু ও ঘটনার রূপ রস রঙ
ঘ্রাণ স্বাদ আলাদা।
যে কখনো নামাজ পড়েনি, সে
নামাজের স্বাদ বুঝতে পারবে না।
যে কখনো তাহাজ্জুদ পড়েনি, সে
তাহাজ্জুদের স্বাদ বুঝতে পারবে না।
আর যদি নামাজ পড়েও আপনি নামাজের
স্বাদ না পান
তবে ভাববেন, আপনার
নামাজই হচ্ছে না। বুঝলেন কিছু?
তখন ছেলেটি গান গেয়ে উঠলো,
ভালো কাজটা নিজে করে স্বাদ নাও
তুমি ভাই
অভিজ্ঞতার বিকল্প ভাই আর কিছু তো
নাই।
আর তো কিছু নাই।
( এরপর সবাই গান ধরবে আর ঘুরে
ঘুরে গাইতে গাইতে মঞ্চ থেকে বিদায় নেবে।)
১১/০৮/২০২০ ৪টা
অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
No comments