এক শীতার্ত সকালে - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ১৫৭

                                                                                            

কবিতা-১৫৭ : এক শীতার্ত সকালে

ফজরের  নামাজ পড়ে ধানক্ষেতের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমাকে বললো, কাকু কই যান?

বললাম, দেখতে এলাম তোরা কেমন আছিস।

ভালো নেই কাকু। বড় বড় কালো পোকা এসে মাঝে মাঝেই আমাদের তছনছ করে দিয়ে যায়।

কোন ওয়ারেন্ট ছাড়াই ধরে নিয়ে যায় যুবক ছেলে।

 

ধানক্ষেত পার হয়েই দেখি ফুলকপি দাঁত বের করে হাসছে। বললো, ভাল আছেন খালু? বসেন, গরম গরম চিতই পিঠা খান। আমি বললাম, নারে আর একটু হাঁটি।

 

ফুলকপির ক্ষেত পার হতেই দেখি গোল গোল টমেটো পাতার ফাঁক দিয়ে লাজনম্র চোখে তাকিয়ে দেখছে, কে যায়। বললাম, লুকোচ্ছিস কেনো? আমি তোর মামা। দেখতে এলাম তোর কিছু লাগবে কিনা।

পাশ থেকে ধনেপাতা বললো, চাচা, কয়েকটা ধনেপাতা নিয়ে যান। নতুন আলুভর্তার সাথে যা লাগবে না। বললাম, কালকের গুলোই শেষ হয়নি এখনো।

 

ক্ষেত ছেড়ে মাঠে উঠে এলাম। বেলগাছে কয়েকটা পাখি বসেছিল। দূর থেকে ডাকলো, দাদা, এদিকে আসেন।

গেলাম। কিরে ডাকলি কেনো?

দাদা, মনে আছে এক সময় এ গ্রাম কোরান তেলাওয়াতে মুখরিত হয়ে উঠতো।

এখন দেখি ছোট ছোট বাচ্চারা পিঠে বিরাট বোঝা নিয়ে কেজি স্কুলে যায়।

আমরা গানের রিহার্সালে বসেছি। দুটো হামদ শুনে যান।

 

আমি সেই পাখিদের গান শুনে ঘরে ফিরলাম। ঘরে ঢুকবো, এসময় রজনীগন্ধা আতরের শিশি ঢেলে বললো, নানা, আপনার জন্য এ  আতর নবীর দেশ থেকে এনেছি।

আমি সহাস্যে হাত বাড়িয়ে বললাম, হায়রে বাংলাদেশ, তোর বুকজুড়ে কুয়াশার মত এতো মায়া।

তুই আমাকে এতো ভালবাসিস, ভাবলেই আমার চোখের কোণ ভিজে যায়।

 

আচ্ছা, তুই যে আমাকে এতো ভালবাসিস, আমি কি বাসি?

যদি বাসতাম, তবে কি কেউ আমার চোখের সামনে তোর সতীত্ব নষ্ট করতে পারতো!

২৮/১০/২০২০ ৭টা

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.