হাততালি দিলাম - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ০৫৬

                                                 

কবিতা-০৫৬ : হাততালি দিলাম

প্রারম্ভিকাঃ

কার খেলা যে কে খেলে, বুঝা বড় দায়

গরু মরলে গেরস্তে না, চিল শকুনে খায়।

কার খেলা যে কে খেলে, তাইতো বুঝি না

খেলা দেখে হাততালি দেই জিততো খুঁজি না।

 

মধ্যমাঃ

প্রিয়তমা তোমাকে চিনবো কি,

আমি তো আমাকেই চিনি না।

আপন পর চিনি না। শত্রু মিত্র চিনি না।

ভালো মন্দ চিনি না। সাদা কালো চিনি না।

শুধু তাকিয়ে দেখি আর হাততালি দেই।

 

জামাত নেতাদের ফাঁসি দেয়া হলো।

মরলো কারা? বাঙালি।

আমি হাততালি দিলাম।

বিএনপি নেতাদের জেলে দেয়া হলো।

জেলে গেলো কারা? বাঙালি।

আমি হাততালি দিলাম।

 

শিবির নেতাদের গুলি করা হলো।

মরলো কারা? বাঙালি।

আমি হাততালি দিলাম।

ছাত্রদের টর্চার সেলে আটকে টর্চার করা হলো। টর্চারের শিকার হলো কারা? বাঙালি।

আমি হাততালি দিলাম।

 

সাধারণ ছাত্রদের পিটিয়ে হত্যা করা হলো।

খুন হলো কারা? বাঙালি।

ছেলেধরা সন্দেহে রাস্তায় পিটিয়ে মানুষ মারা হলো। মরলো কারা? বাঙালি।

আমি হাততালি দিলাম।

 

হুজুরদের জঙ্গী বানিয়ে শায়েস্তা করা হলো।

শায়েস্তা হলো কারা? বাঙালি।

সারাদেশে নেশার দ্রব্য ছড়িয়ে দেয়া হলো।

নেশাগ্রস্ত হলো কোন জাতি? বাঙালি।

আমি হাততালি দিলাম।

 

এইসব কাজে সহযোগিতা করলো কারা?

ডিসি, ভিসি, প্রশাসন ও ডেঙ্গারে বাহিনী।

এরা কারা? বাঙালি।

আমি হাততালি দিলাম।

 

উপসংহারঃ

সেকেন্ড হাফের খেলা শুরু হয়ে গেলো।

ডিসি, ভিসি, প্রশাসন, বাহিনী ভালই খেললো।

এবার সিরাজদৌলার চরিত্র হননের পালা।

যেখানে যেখানে দরকার পড়লো

ছোবল মারলো সি সি ক্যামেরা।

ডিসিরা লজ্জায় মুখ লুকালো।

সম্মানিত ভিসিদের জুচ্চোরি

হঠাৎ করেই সব ধরা পড়ে গেল।

ভিসিরা সব অসুস্থ হয়ে গেল।

আমি হাততালি দিলাম।

 

হ্যা, এতদিন পর হঠাৎ করেই প্রশাসনের মনে পড়ে গেলো ক্যাসিনোর কথা।

ক্যাসিনো সম্রাট বন্দী হলো।

রাস্তার পাশে পাওয়া গেল ট্রাক বোঝাই টাকা। বেরিয়ে এলো সিংগাপুর রহস্য।

ডান হাত খসে পড়লো ডেঙ্গারে বাহিনীর।

আমি হাততালি দিলাম।

 

বুয়েটের ছেলে মরলো টর্চার সেলে।

ক্ষোভে ফেটে পড়লো জনসমুদ্র।

কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার কাজ প্রায় শেষ।

কিছু না বুঝেই আবারও আমি হাততালি দিলাম।

 

ততোক্ষণে প্রতিরোধের সব কটি দূর্গ

ঝড়ে তছনছ হয়ে গেছে।

খেলা প্রায় শেষ।

বাড়ি যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ালাম। ওরা হয়তো এখনি বিজয় মিছিল বের করবে। কিন্তু একি!

 

হঠাৎ দেখতে পেলাম ঢাকা ভার্সিটিতে

জ্বলে উঠেছে চেরাগ।

বেজে উঠলো সেলফোন।

খবর আসতে থাকলো সারা দেশ থেকে ছাত্ররা নেমে পড়েছে খেলতে।

না, এ খেলা থামবে না, চলতেই থাকবে।

 

বললো চেরাগ, কই হে ভাইয়েরা।

সামনে বাড়ো।

যে নিশান তুলে ধরেছে আবরার,

তাই নিয়ে আমরা এগিয়ে যাবো।

 

আমার কি হলো?

আবারও কিছু না বুঝেই

আমি হাততালি দিলাম।

১০/১০/২০১৯ বিকাল ৫টা

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.