রহমতের চাদর - অপ্রকাশিত কবিতাঃ ১২১

                                                                                  

কবিতা-১২১ : রহমতের চাদর

আমি এক অনাবিল ভালোবাসা দেখেছি।

দেখেছি মমতাভরা নয়ন যুগল।

আমরা হাত ধরাধরি করে বহু

দুর্গম পথ পাড়ি দিয়েছি।

 

আমরা আমাদের প্রেমের জন্য কী না করেছি?

দীঘল রাত পার করেছি বিনিদ্র।

একসাথে পাখির আজান শুনেছি।

একসাথে সিজদা দিয়েছি।

কী না করেছি?

 

আমরা নিজেরা কখনো গন্ধম

খাবো না বলে অঙ্গীকার করেছি।

ভাঙ্গা নায়ে উড়িয়েছি বিশ্বাসের মাস্তুল।

পদ্মা মেঘনায় ঢেলে দিয়েছি তাজা খুন

 

তারপর। তারপর একদিন,

কী যে হলো আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না।

মনে হলো হিমালয় থেকে উড়ে এলো উত্তুরে বাতাস।

বাতাসে ভর করে উড়ে এলো অহমিকার চাদর।

কারো কারো গায়ে সে চাদরটা চমৎকার মানিয়েও গেল।

 

যে অন্তরে একবার অহমিকা ঢুকে

সে অন্তর হয়ে যায় নিরেট পাথর।

জননেতা হয়ে যায় কঠিন স্বৈরাচার।

বন্ধুরা হয়ে যায় প্রতিদ্বন্দ্বী।

ক্ষমতা এমন এক জিনিস, এর জন্য পিতা হত্যা করে সন্তানকে।

ভাই হত্যা করে ভাই।

সন্তান হত্যা করে নিজের জণ্মদাতাকে।

 

আমরা সবাই ছিলাম আল্লাহর গোলাম।

অনেকেই অনুভব করলো, কেউ কেউ চাইছে, আল্লাহর গোলাম হওয়ার সাথে সাথে আমরা যেনো তাদেরও গোলাম হই।

ক্ষমতার জোরে ডাক্তারকে হালচাষের কাজে লাগিয়ে দেয়া হলো।

আর কৃষককে বলা হলো, যাও তো ভাই, একটু রোগী দেখো।

 

আমরা জানতাম, দুনিয়ায় আমিত্ব

জাহির করার জন্য আমরা কেউ আসিনি। এসেছি গোলামী করতে। যেমন গোলাম ছিলেন, মহাবীর খালিদ (র)।

বিশ্বসেরা সেনাপতিকে আমরা দেখেছি, আমিত্ব বিসর্জন দিয়ে সাধারণ সৈনিকের বেশে জিহাদে মত্ত।

এরই নাম ইসলাম।

 

আলহামদুলিল্লাহ। মনে হচ্ছে,

আমাদের সামনেও এক অনাগত বসন্ত হাজির। ঈদের পাঞ্জাবি পরে অনেকেই মাঠে চলে এসেছেন।

ইমামও খোতবা দেয়ার জন্য দাঁড়িয়ে গেছেন।

এখনি জামাত শুরু হবে।

সালাতের পর চলবে মহব্বতের কোলাকুলি।

ভাইকে ভাইয়ের জড়িয়ে ধরা।

 

আসুন, এটাই আমাদের জন্য রবের দেয়া রহমত। আসুন, সবাই আবার আল্লাহর নিরেট গোলাম হই।

কল্যাণ শুধু এর মধ্যেই নিহিত।

 

সবাই সম্রাট শাহজাহান হতে পারে না।

সবার ভাগ্যে জোটে না, শাহাদাতের শরবত।

 

আসুন, সকলেই হাত তুলি প্রভুর কাছে,

সমস্বরে কেঁদে বলি, হে প্রভু,

তুমিই আমাদের রব।

তুমিই আমাদের সব।

আমাদেরকে তুমি তোমার

রহমতের চাদরে ঢেকে রাখো।

রহমতের চাদরে ঢেকে রাখো।

রহমতের চাদরে ঢেকে রাখো।

২৫/০৬/২০২০ ৫টা

অপ্রকাশিত অন্যান্য কবিতার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

No comments

Powered by Blogger.